মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১০:২৯ পূর্বাহ্ন
পিরোজপুর প্রতিনিধি॥ সরকারি চাকরি সেতো দুর্লভ। তাই সরকারি চাকরিকে রুপক অর্থে সোনার হরিণের সঙ্গে বিবেচনা করা হয়। কেউ আবার আকাশ ছোঁয়ার সঙ্গে তুলনা করছেন।
এক টাকার বিনিময়ে সেই ‘সোনার হরিণ’ পেয়েছেন প্রত্যান্ত গ্রামের দুই বেকার যুবক। চাকরি পেতে তাদেরকে কাউকে ঘুষ দিতে হয়নি। মামার জোর দরকার হয়নি। এমনকি প্রয়োজন হয়নি কোন প্রভাবশালীর মুঠোফোনের দাপট।
এক টাকায় পুরো একটি সোনার হরিণ লুফে নিয়েছেন। তবে এতকিছু সম্ভব হয়েছে একজন সরকারি কর্মকর্তার বদৌলতে। ওই কর্মকর্তা দুই বেকার যুবককে শুধু সোনার হরিণ তুলে দেননি। নিয়োগপত্রের সঙ্গে দিয়েছেন উপহার সামগ্রীও।
সেই কর্মকর্তা হচ্ছেন পিরোজপুরের জেলা প্রশাসক আবু আলী মো. সাজ্জাদ হোসেন। আবু আলী মো. সাজ্জাদ হোসেন বলেন, দুই বেকার যুবক প্রত্যেকে এক টাকা দিয়ে সরকারি চাকরি পেয়েছেন। তারা যে ৫০ টাকা দিয়ে চাকরির আবেদন করেছিল, তার ৪৯ টাকা উপহার হিসেবে দেয়া হয়েছে। তাদের হাতে শুধু নিয়োগপত্র নয় সঙ্গে ফুল দিয়ে বরণ করে নেয়া হয়েছে। শুধু তাই নয় তাদের পরিবারের জন্য মিষ্টি, আর মায়েদের জন্য নতুন শাড়ি দেয়া হয়েছে।
জেলা প্রশাসক আবু আলী মো. সাজ্জাদ হোসেন আরো বলেন, সার্কিট হাউজে চতুর্থ শ্রেণি পদের চাকুরিতে তারা অত্যান্ত স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় নিয়োগ পেয়েছেন। কোন ধরনের তদবির ছিল না।
নিয়োগ পেতে তাদের এক টাকার বাইরে আর কোন টাকা লাগেনি। আমরা অত্যান্ত আনন্দিত ও গর্বিত এই জন্য যে আমরা অত্যান্ত দুর্নীতিমুক্তভাবে তাদেরকে নিয়োগ দিতে পেরেছি। মাননীয় মন্ত্রী এ্যাডভোকেট শ ম রেজাউল করিমকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি তার সহযোগিতার জন্য। আমরা এই নিয়োগের মাধ্যমে একটি ম্যাসেজ দিত চাই, আর সেটি হচ্ছে স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় নিয়োগ দেয়া সম্ভব।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী এ্যাডভোকেট শ ম রেজাউল করিম মুঠোফোনে বলেন, পিরোজপুরের সকল নিয়োগ প্রক্রিয়া অত্যান্ত স্বচ্ছ ভাবে হচ্ছে। শুধু এই দুই বেকার যুবক নন, আমার সময় যারা পুলিশ বিভাগে চাকুরি পেয়েছেন, তাদের একটি টাকাও ঘুষ দিতে হয়নি। আগামীতে প্রত্যকটি নিয়োগ প্রক্রিয়া স্বচ্ছ হবে, যাতে করে মেধাবীরা চাকুরি পাবেন।
সার্কিট হাউজে পরিচ্ছন্নতা কর্মী পদে চাকুরি পেয়েছেন মো. আল-আমিন হাওলাদার। তিনি পিরোজপুর সদর উপজেলার উত্তর শিকারপুর এলাকার মৃত মো. মন্নান হাওলাদারের ছেলে। মালি পদে মো. মনিরুল ইসলাম চাকরি পেয়েছেন। তিনি পিরোজপুর সদর উপজেলার উত্তর কৃষ্ণনগর এলাকার মো. ছিদ্দিকুর রহমানের ছেলে। তারা দুজনই অত্যান্ত দরিদ্র পরিবারের সন্তান।
নিয়োগপ্রাপ্তরা আল-আমিন হাওলাদার ও মনিরুল ইসলাম বলেন, আমরা পঞ্চাশ টাকার ব্যাংকড্রাফট জমা দিয়ে আবেদন করেছিলাম। চাকুরির জন্য কোন ধরনের তদবির ছিল না।
ছিল না চাকুরির জন্য ঘুষ দেয়ার পর্যাপ্ত টাকা। জেলা প্রশাসক মহোদয় মাত্র এক টাকার বিনিময়ে আমাদেরকে চাকুরি দিয়েছেন। স্যারের কাছে অঙ্গিকার করেছি, চাকুরি জীবনে দুর্নীতির আশ্রয় নিবো না। সৎ ভাবে জীবনযাপন করবো।
Leave a Reply